বিটরুটের উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রিয় পাঠক, আপনি যদি বিটরুটের উপকারিতা ও অপকারিতা,  বিটরুট বাংলাদেশের কোথায় পাওয়া যায়, বিটরুটের এর দাম কত, বিটরুট এর ছবি এবং বিটরুট এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই কন্টেন্ট শেষ অবধি পড়ুন।

বিটরুটের উপকারিতা ও অপকারিতাঅনেকেই বলেন বিটরুট কি। বিট বা বিটরুট আমাদের অনেকের কাছেই অপরিচিত একটি ফল। অনেকে সবজি হিসেবেও চিনেন। এই ফলটি গোলাকার এবং দেখতে লাল রঙের হয়, তবে অনেক জায়গায় হলুদ এবং সাদা রঙেরও  দেখা যায়।বিটরুট এর উপকারিতা রয়েছে। বিটরুট এর উপকারিতার পাশাপাশি কারো কারো জন্য বিটরুট এর অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। এজন্য আমাদের বিটরুট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে।

বিটরুট এর উপকারিতা

বিটরুট এর উপকারিতা আমাদের অনেকের কাছে অজানা। চলুন জেনে নেই বিটরুট এর উপকারিতা। বিটরুট এর উপকারিতা গুলো হলো-

  • বিটরুটে আছে নাইট্রেটস, যা হাই প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ কমায়।
  • বিটরুটে রয়েছে অনেক ফাইবার, যা আমাদের হজম ক্রিয়া সম্পন্ন করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। খারাপ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ায়।
  • বিটরুট খেলে রক্তনালীর জ্বালাপোড়া কমে।
  • শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • বিটরুট এর রস খেলে চোখের জ্যোতি এবং স্বাস্থ্য উন্নত হয়।
  • বিটরুটে পাওয়া যায় ফলিক এসিড, তাই গর্ভধারণ-কালে বিটরুট খেলে বাচ্চা সুস্থ থাকে।
  • এতে পাওয়া যায় অনেক ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, আয়রন, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং
  • রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।
  • ক্যালসিয়াম থাকার কারণে এটি খেলে হাড় ও দাঁত গঠনে সহায়তা করে।
  • বিটরুট দিয়ে রূপচর্চাও করা যায়। এতে থাকা ভিটামিন সি চুল এবং ত্বক ভালো রাখার জন্য খুবই উপকারী।
  • বিটের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এটি লিভারের চর্বিও কমায়।
  • বিট বা বিটরুট খেলে রক্তে লোহিত কণিকা তৈরি হয়। এ কারণে মাসিকের সমস্যা সমাধান হয়।
  • এতে ক্যালরির পরিমাণ অল্প থাকায় ওজন সহজে বৃদ্ধি পায় না।
  • বিটরুট এর আরও উপকারিতা হলো, এটি হার্ট ভালো রাখে এবং মানসিক চাপ দূর করতে সহায়তা করে।

আরও পড়ুন :স্টেভিয়া বা চিনিগুড়া গাছের উপকারিতা

বিটরুট এর অপকারিতা

পুষ্টিগুণে ভরপুর বিটরুট এর উপকারিতা সম্পর্কে আমরা জেনেছি। কিন্তু কিছু কিছু সমস্যা থাকলে বিটরুট খাওয়া যাবেনা। নিয়ম মতো না খেলে বিটরুট এর উপকারিতার চেয়ে অপকারিতা বেশি হতে পারে। যাদের কিডনিতে পাথর রয়েছে বা হয়েছিল, এ ধরনের সমস্যা থাকলে বিটরুট এড়িয়ে চলুন। কেননা বিটরুটে রয়েছে অক্সালেট উপাদান। এটি কিডনির সমস্যা আরও বাড়াতে পারে।

যাদের শরীরে চুলকানি বা অ্যালার্জি-জনিত রোগ রয়েছে তারাও বিটরুট খেলে সমস্যায় পড়তে পারেন। এটি এই রোগকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। যাদের লো-প্রেশার রয়েছে তা যদি বিটরুট খায় তাহলে প্রেশার আরও কমে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিটরুট ঠাণ্ডা জাতীয় হওয়ায় শীতকালে অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো। অনেকে বলেন শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকলে অতিরিক্ত বিটরুট খাওয়া চলবে না।

অতিরিক্ত বিটরুট বা এর রস পান করলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিস রোগী বিটরুট খেলে স্নায়ুর সমস্যা হয়। গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে, না হলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।

বাংলাদেশের কোথায় পাওয়া যায়

বিটরুট ছোট কোনো বাজারে তেমন দেখা না মিললেও বড় কাঁচা বাজারে খোঁজ করলে পেতে পারেন। বর্তমানে সব সময়ই পাওয়া যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন সুপার শপেও এটি পাওয়া যায়। ফল বা সবজি হিসেবে না পেলেও বাজারে বিটরুটের পাউডার সহজেই পাওয়া যায়। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বিটরুট চাষ হচ্ছে।

বিটরুট এর দাম কত

সাধারণত শীতকালে বেশি পাওয়া যায়। এসময় এর দাম থাকে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। কিন্তু অন্যান্য মৌসুমে এর চাষ কম হওয়ার কারণে এর দাম বেড়ে যায়। তখন ১ কেজি বিটরুট এর দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে পরিবেশ ভেদে এর দাম আলাদা আলাদা হতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন শরবতের দোকানে ২০ থেকে ৩০ টাকায় এক গ্লাস বিটরুটের শরবত পাওয়া যায়।

বিটরুটের পুষ্টিগুণ

পূর্বে আমরা বিটরুটের উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি।বিটরুটের পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, বিভিন্ন ধরনের উপকারী ভিটামিন যেমন সি, এ, বি ১২ এবং আরও রয়েছে আয়রন, জিঙ্ক, ফাইবার, পটাশিয়াম ইত্যাদি। এছাড়াও আরও অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে বিটরুটে। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক প্রয়োজন।

সম্মানিত পাঠক আজকে আমরা জেনেছি বিটরুট কি, বিটরুটের উপকারিতা ও অপকারিতা, বাংলাদেশের কোথায় পাওয়া যায়, বিটরুটের দাম কত, বিটরুট এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে শেয়ার করুন।

1 thought on “বিটরুটের উপকারিতা ও অপকারিতা”

Leave a Comment