ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে অবাধ চলাচলের ধারণাটি অনেক পুরোনো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার পর আধুনিক সময়ে এ ধারণাটি নেওয়া হয়। ১৭ জুন ১৯৮৪ ফ্রান্স ও জার্মানি প্রথম মুক্ত চলাচলের ধারণার বিষয়ে প্রাথমিক পদক্ষেপ নেয়। পরবর্তীতে ১৪ জুন ১৯৮৫ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাঁচ সদস্যদেশ- জার্মানি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, লুক্সেমবার্গ এবং নেদারল্যান্ডস সীমান্তমুক্ত অঞ্চল গড়তে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এরপর ১৯ জুন ১৯৯০ শেনজেন চুক্তির সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়নের জন্য একটি কনভেনশন স্বাক্ষর করা হয়।
এ কনভেনশনে অভ্যন্তরীণ সীমানা বিলুপ্তি, অভিন্ন ভিসা প্রদান পদ্ধতির সংজ্ঞা, Schengen Information System (SIS) নামে একটি একক ডেটাবেস পরিচালনা এবং সেইসাথে অভ্যন্তরীণ এবং অভিবাসনের মধ্যে একটি সহযোগিতা কাঠামো প্রতিষ্ঠার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২৫ জুন ১৯৯১ পর্তুগাল ও স্পেন শেনজেনভুক্ত হয়। ২৬ মার্চ ১৯৯৫ এ ৭টি দেশ শেনজেন চুক্তি কার্যকরের মাধ্যমে তাদের অভ্যন্তরীণ সীমান্ত চেকপোস্ট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে ইউরোপের অন্যান্য দেশ শেনজেনে যুক্ত হয়। লুক্সেমবার্গের শেনজেন নামক স্থানে।
আরো পড়ুনঃ নৈতিকতা বলতে কি বুঝায়? নৈতিকতার উৎস ও প্রকৃতি
শেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকা ২০২৫
ইউরোপের ২৭ সদস্যের ২৫টি এবং ইউরোপীয় মুক্ত বাণিজ্য সংস্থার ৪ টি দেশ মিলে মোট ২৯ টি দেশ শেনজেনভুক্ত।
- পর্তুগাল
- জার্মানি
- ফ্রান্স
- ইতালি
- অস্ট্রিয়া
- বেলজিয়াম
- বুলগেরিয়া
- ক্রোয়েশিয়া
- চেক রিপাবলিক
- ডেনমার্ক
- এস্তোনিয়া
- ফিনল্যান্ড
- গ্রিস
- হাঙ্গেরি
- লাটভিয়া
- লিথুয়ানিয়া
- লুক্সেমবার্গ
- নেদারল্যান্ডস
- পোল্যান্ড
- রোমানিয়া
- মাল্টা
- স্লোভাকিয়া
- স্লোভেনিয়া
- স্পেন
- সুইডেন
- সুইজারল্যান্ড
- নরওয়ে
- আইসল্যান্ড
- লিচটেনস্টাইন
শেনজেন চুক্তির ধারাবাহিকতায় সৃষ্টি হয় ‘শেনজেন ভিসা’। শেনজেন ভিসার মাধ্যমে শেনজেনভুক্ত দেশগুলোতে পর্যটন কিংবা যেকোনো কাজে প্রত্যেক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৯০ দিন অবস্থান করতে পারেন। শেনজেনভুক্ত যেকোনো একটি দেশের ভিসাতেই ২৯টি দেশে ভ্রমণ করা যায়। এ ভিসায় শেনজেনভুক্ত দেশ ছাড়াও তুরস্ক, উত্তর মেসিডোনিয়া, আলবেনিয়া, বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনা, কসোভো, জর্জিয়া, সাইপ্রাস, ভালবার্ড (নরওয়ের দ্বীপ) ভ্রমণ করা যায়।
শেনজেন এরিয়া
‘শেনজেন এরিয়া‘ ইউরোপের সীমান্তমুক্ত অঞ্চল। যেখানে ধরা-বাধা নিয়ম ছাড়াই চলাচল করা যায়। হোক সেটা স্থল, সমুদ্র বা আকাশপথ। শেনজেনভুক্ত নির্দিষ্ট এ এলাকার প্রায় ৪৫ কোটিরও বেশি মানুষ অবাধে যাতায়াত করতে পারেন। শেনজেনভুক্ত দেশগুলো তাদের জাতীয় সীমানা বিলুপ্তি করে দেশগুলোর মধ্যে ব্যক্তিদের অবাধ চলাচলের অনুমতি প্রদান করে। একটি শেনজেন দেশের নাগরিকত্ব বা ভিসা থাকলে অন্য সকল সদস্য দেশে সহজেই ভ্রমণ করা যায়।
উপসংহার,
শেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকা ২০২৫ পোস্টটি মাধ্যমের আপনি জানতে পারলেন এক ভিসার শেনজেন ভুক্ত ২৯ টি দেশের ভ্রমণ করা কোনোরকম চেকিং ছাড়াই তার সম্পর্কে। ধন্যবাদ মনোযোগ সহকারে পোস্টটি পড়ার জন্য।